লাখাই প্রতিনিধি :
হবিগঞ্জের লাখাইয়ের বামৈ মডেল সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মুমিনুল হকের বিরুদ্ধে ছাত্রীকে যৌন হয়রানীর অভিযোগে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে তাকে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশনা দিয়েছেন লাখাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শরিফ উদ্দিন।
বুধবার (২৩ মার্চ) সকাল দশটা থেকে অত্র স্কুলের ছাত্র ছাত্রীরা শিক্ষক মুমিনুলের শাস্তির দাবিতে হবিগঞ্জ-লাখাই সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করে। ঘন্টাব্যাপী চলমান বিক্ষোভ এ সড়কে আগুন জ্বালিয়ে দেন শিক্ষার্থীরা, এসময় যানবাহন আটকে গিয়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়।
খবর পেয়ে লাখাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শরিফ উদ্দিন ও লাখাই থানা অফিসার ইনচার্জ সাইদুল ইসলাম পুলিশ ফোর্স নিয়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। এ সময় বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে নির্বাহী অফিসার মোঃ শরিফ উদ্দিন অভিযুক্ত শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্তের নির্দেশনা দেন। ওসি সাইদুল ইসলাম এ বিষয়ে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দেন।
ইতোপূর্বে হয়রানির শিকার ছাত্রীর পিতা কতৃক ইউএনও বরাবর দায়েরকৃত লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, যৌন হয়রানীর শিকার ওই ছাত্রী বামৈ সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়ের ২০২২ সালের এস.এস.সি পরীক্ষার্থী ছিলেন। শিক্ষক মুমিনুল হক প্রায়ই স্কুলে ওই ছাত্রীকে বিভিন্ন ভাবে উত্যক্ত করতেন ।
বিভিন্ন সময় তার আচরণ দ্বারা ওই ছাত্রীকে যৌনভাবে প্রলুব্ধ করার চেষ্টা করতেন। এ কারণে ওই ছাত্রী মুমিনুলকে এড়িয়ে চলতেন। বিষয়টি ছাত্রী তার পরিবারকে জানালে পরিবার তাকে নিরবে মোকাবেলা করার পরামর্শ দেন।
গত ১৬ মার্চ সকাল ১০.০০ ঘটিকায় স্কুলের প্রাত্যহিক সমাবেশ ( এসেম্বলী ) শুরু হলে ওই ছাত্রী শারীরিক অসুস্থতা বোধ করায় এসেম্বলিতে না গিয়ে স্কুল ভবনের তৃতীয় তলায় তার শ্রেণীকক্ষে বসেছিলেন।
এ সময় সহকারী শিক্ষক মোঃ মুমিনুল হক ওই ছাত্রীর কাছে গিয়ে অশ্লীল যৌন ইঙ্গিত প্রদর্শন করে এবং তার হাতে জাপ্টে ধরে । এসময় বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক গিয়াস উদ্দিন এবং আয়া গৌড়ী এর আগমনের সাড়া পেয়ে মুমিনুল হাত ছেড়ে দেন । গিয়াস উদ্দিনকে মোঃ মুমিনুল হক তখন বলেন সে অসুস্থ, এসেম্বলিতে যাবে না । মুমিনুলের এই আচরণে ছাত্রী হতবিহ্বল হয়ে পড়েন। এরপর ওই ছাত্রী ছাদে চলে যান। কিছুক্ষণ পর মোঃ মুমিনুল হক ছাদে গিয়ে আবার ছাত্রীকে যৌন উদ্দেশ্যে জাপ্টে ধরেন। তখন ছাত্রী তার হাত থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যে অনেক চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে চিৎকার করলে মুমিনুল হক তার মুখ চেপে ধরেন ।
বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মোঃ আব্দুল করিম ঘটনাস্থলে এসে পড়লে মুমিনুল ওই ছাত্রীকে ছেড়ে দেন এবং স্বাভাবিক হওয়ার চেষ্টা করেন। ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর ওই ছাত্রী আত্মহত্যার চেষ্টা করেন বলে জানা যায়। এ বিষয়ে তাৎক্ষনিক ভাবে স্কুলের প্রধান শিক্ষক মামুনুর রশিদ চৌধুরীকে জানানোর পরেও তিনি মুমিনুল হকের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করে বরং তাকে রক্ষায় যাবতীয় চেষ্টা-তদবির চালানোর অভিযোগ পাওয়া যায়।