বাহার উদ্দিন, লাখাই থেকে :
হবিগঞ্জের লাখাইয়ে প্রথমবারের মতো বারি সরিষা-১৮ আবাদ করে বাম্পার ফলন হওয়ায় খুবই উল্লসিত লাখাইর করাবের সরিষা চাষী শাহজাহান।চাষী শাহজাহান চলতি বছর তার ৫ বিঘা জমিতে বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট এর উদ্ভাবিত বারি সরিষা-১৮ জাতের সরিষা আবাদ করেছেন।কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট এর মাধ্যমে পাওয়া বীজ তিনি তার জমিতে আবাদ করেন।প্রতি বিঘায় চাষাবাদের খরচ হয়েছে প্রায় ৩০০০ টাকা হিসাবে মোট ১৫০০০ হাজার টাকা।সরিষার ফলন খুবই ভাল হয়েছে।কৃষক শাহজাহান জানান আমার ৫ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদে খরচ হয় ১৫০০০ টাকা।
ফলন যা হয়েছে তাতে আমি আশা করছি প্রতি বিঘায় ৪ মন হিসাবে সরিষার ফলন হতে পারে।বর্তমান বাজার দর ৩৫০০ টাকা।এ হিসাবে আমার ২০ মন সরিষা বিক্রি হবে প্রায় ৭০,০০০ টাকায়।এতে আমার আয় হবে ৫৫,০০০ টাকা।তাই সরিষার আবাদ করে আমি লাভবান হওয়ায় খুবই আনন্দিত।তিনি আরোও জানান রোপা আমন ধান কাটার পর সরিষা বোনায় কিছুটা বিলম্বে আবাদ হয়েছে নতুবা ফলন আরোও বেশী হতো।
এ ব্যাপারে বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট এর সরজমিন গবেষনা বিভাগ,এস এলটি সাইট অফিস হবিগঞ্জের দায়িত্বপ্রাপ্ত এসিট্যান্ট সাইন্টিস্ট মোঃ হারুনুর রশীদ জানান বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনস্টিটিউট কর্তৃক উদ্ভাবিত সর্বশেষ জাত বারি সরিষা -১৮। এটি ক্রুসিফেরী পরিবারের ব্রাসিকা ন্যপস প্রজাতির অন্তর্গত একটি জাত।
এ জাতটি বাংলাদেশে উদ্ভাবিত প্রথম ক্যানোলা বৈশিষ্ট্যের জাত যা ২০১৮ সালে জাতীয় বীজ বোর্ড কর্তৃক নিবন্ধন করা হয়।৯৫-১০০ দিনের ফসল এটি।এর ফলন হেক্টর প্রতি প্রায় ২৫০০ কেজি যাতে তেলের পরিমান ৪২%। এ জাত মানবদেহের জন্য ক্ষতিকারক ইরুসিক এসিডের পরিমান ১.৬% যা অন্যান্য তেলে ০৫-৪০%। এ জাতটি বাণিজ্যিক ভাবে আগাম চাষ করলে কৃষককূল তথা দেশের তেলের চাহিদা পুরনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।
এ ব্যপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাকিল খন্দকার জানান এদেশের কৃষকরা সাধারণত স্থানীয় জাতের সরিষার আবাদ করে থাকে যার হেক্টর প্রতি গড় ফলন মাত্র ৮৫০ কেজি বা প্রতি শতাংশে ৩.৫ কেজি। যেসব কৃষকেরা দীর্ঘমেয়াদী (১০০-১২০ দিন) সরিষার জাত ব্যবহার করতে চান, তারা ঝাঁঝমুক্ত বারি সরিষা-১৮ (ক্যানোলা জাত) ব্যবহার করতে পারেন যা রান্নার তেল হিসেবে ব্যবহার হয়।
বারি সরিষা-১৮ জাতের তেলে ইরুসিক এসিডের পরিমাণ ১.০৬% যেখানে বর্তমানে বাংলাদেশে চাষকৃত অন্যান্য উন্নত সরিষার জাতে ইরুসিক এসিডের পরিমাণ ৪০%-৪৫%। পরিমাণ মত সার ও সেচ প্রয়োগে এ জাত ২.০-২.৫ টন/হেক্টর (৮-১০ কেজি/শতাংশ) পর্যন্ত ফলন দেয়। বারি সরিষা-১৪ চেয়ে বারি সরিষা-১৮ শতাংশে প্রায় ২ থেকে ৬ কেজি বেশী ফলন দিয়ে থাকে।