আকিকুর রহমান রুমনঃ-হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে হত্যার পর লাশ গুমের অভিযোগে একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে বানিয়াচং থানায়।
অন্যত্রে হত্যা করে হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আঞ্চলিক সড়কের সুটকী নদীর পাড়ে লাশ ফেলে রেখে পালিয়ে যাওয়ার সময় জনতার হাতে আটক ঘাতক প্রেমিক অনিক পান্ডেকে প্রধান আসামী ও অজ্ঞাতনামা আসামী দিয়ে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন নিহত গৃহবধূর মা হেনা বেগম।মামলাটি এফআইআর ভূক্ত করা হয়েছে।
নিহত গৃহবধূর নাম জোনাকী আক্তার(২৫)সে উপজেলার কুতুবখানী মহল্লার অপু মিয়ার স্ত্রী ও রঘুচৌধরী পাড়া(বর্তমান ঠিকানা চতুরঙ্গরায়ের পাড়ার)রাইছ মেইল চালক আবু মিয়ার মেয়ে। নিহত গৃহবধূর বায়েজীদ(৫) ও তন্নি বেগম(৩) নামে দুটি সন্তান রয়েছে।
হত্যার দায়ে অভিযুক্ত আসামীর নাম অনিক পান্ডে(৩২)।সে একই উপজেলার কাষ্টগড় গ্রামের মৃত মৃনাল কান্তির পুত্র।
মামলার বিবরনে জানা যায়,পূর্ব পরিচয়ের সূত্রে নিহত গৃহবধূ জোনাকিকে প্রেমের প্রস্তাবে ফুসলিয়ে পরকীয়া প্রেমের ফাদে ফেলে ২০ থেকে ২৫ দিন পূর্বে বাড়ী থেকে নিয়ে যায় এই অনিক পান্ডে।
এ সময় গৃহবধূর সাথে ছিল ৩ বছরের মেয়ে তন্নি বেগম।
এরপর নেত্রকোনা জেলা সদরের বলাই-নকুয়া গ্রামের সুনীতা নন্দীর বাড়িতে স্বামী-স্ত্রী‘র পরিচয়ে ভাড়াটিয়া হিসেবে বসবাস করতে থাকে।
২৪ অক্টোবর সকাল ৮টায় অনিক পান্ডে অজ্ঞাতনামা সহযোগীদের সহায়তায় মারপিট করে যৌনাঙ্গে আঘাত করে।
এবং একপর্যায়ে মৃত্যু নিশ্চিত করতে শ্বাষরোধ করে হত্যা করে ।
মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর অজ্ঞাতনামা সহযোগীদের সহায়তায় নেত্রকোনা হইতে এ্যাম্বুলেন্সে করে লাশ নিয়ে বানিয়াচংয়ের উদ্দেশ্যে রওনা হইয়া হবিগঞ্জ-বানিয়াচং আঞ্চলিক সড়কের সুটকী নদীর পাশে বিকাল ৩টায় উপস্থিত হয়।
এ সময় গৃহবধূর লাশ ও ছোট মেয়েকে রেখে পালিয়ে যাওয়ার সময় আশপাশের লোকজন ঘাতক অনিক পান্ডেকে আটক করে থানা পুলিশে খবর দেয়।
খবর পেয়ে গৃহবধূর পরিবারের লোকজন এসে লাশ সনাক্ত করেন।
বানিয়াচং থানা পুলিশ লাশ উদ্ধার করে এবং লাশের সুরতহাল তৈরি করে ময়না তদন্তের জন্য রবিবার সকালে হবিগন্জ প্রেরন করেন।
পরে ময়না তদন্তের কাজ শেষ করে ২৫ অক্টোবর রবিবার জোনাকির পরিবারের লোকজন বিকাল ৪ টার দিকে চতুরঙ্গরায়ের পাড়া জামে মসজিদে জানাজার নামাজ শেষে গৃহবধূ জোনাকির লাশ চতুরঙ্গ রায়ের পাড়া মহল্লার পারিবারিক কবরস্হানে দাফন করা হয়।
এ ব্যাপারে নিহত গৃহবধূর মা ও মামলার বাদী হেনা আক্তার বলেন,আমার মেয়েরে ওই খুনী অনিক খুন করছে। এছাড়াও এই খুনীর সাথে তার অনেক সহযোগী মানুষ ছিল এ খুনের ঘটনায় জড়িত।
এই খুনী শুধু আমার মেয়েকে খুন করেনী।আমার মেয়ের দুটি অবুঝ শিশু বাচ্ছা ছেলে-মেয়ের ও জীবনটাকে নষ্ট করে দিয়েছে।
আমি এর উপযুক্ত বিচার চাই এবং ওই খুনীর ফাসি চাই।
এ ব্যাপারে বানিয়াচং থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃএমরান হোসেন মামলা দায়েরের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান,নিহত গৃহবধূর মা হেনা বেগম মামলা দারে করেছেন।আসামীকে আমরা হত্যাকান্ডের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবো।
উল্লেখ্য গত ২৪ অক্টোবর এই হত্যার ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকসহ বিভিন্ন অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদটি ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে পরলে দেশ-বিদেশ থেকে এই ঘাতক অনিক পান্ডের ফাঁশি চেয়ে তাদের মতামত প্রদান করেন।
এছাড়া এই খুনের ঘটনায় অন্যান্য আসামীদের গ্রেফতার করার জন্য পুলিশ প্রশাসনের সকল গোয়েন্দা সংস্হার নিকট জোরদাবীও জানান তারা।
এছাড়া এই খুনের ঘটনায় গত ২৪/২৫ অক্টোবর দু’দিন ধরে বানিয়াচং উপজেলার বিভিন্ন খাট,বাজারের সর্ব মহলে আলোচনার কেন্দ্র বিন্দুতে ছিল এবং এসব আলাপ আলোচনায় ওদের সকল অপরাধ জগতের কর্মকান্ড ও অপকর্ম গুলো প্রকাশ হতে থাকে।
এমনকি বানিয়াচং উপজেলাবাসী সহ দেশ-বিদেশে অবস্হানকারীগন ফেইসবুক সহ ইন্টারনেটের মাধ্যমে এই বিষয়টিকে সারা বিশ্বে তোলপাড় সৃষ্টি করে আলোচনার শীর্ষে স্হান করে নিয়েছেন।তারা এই অনিক পান্ডের ফাঁশি চেয়ে এবং এই খুনের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবী জানিয়ে ফেইসবুক পোস্টসহ বিভিন্ন ভাবে প্রতিবাদ করে আসছেন।