মাধবপুরে এমপি’র সামনে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে মারপিট ॥
স্টাফ রিপোর্টার ॥ মাধবপুরে মহান স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠান পরিচালনাকালে জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক স্বীকার করায় উপজেলা নির্বাচন অফিসার শহীদুল ইসলামকে মারপিট করেছে আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এ ঘটনায় উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি শাহ মোঃ মুসলিমসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করে ৪০ জনের বিরুদ্ধে দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এদিকে মামলা দায়েরের খবর শুনে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন। মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে তারা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ২৬ মার্চ রাতে আলোচনা সভার আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রাশেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মাহবুব আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা বিএনপি সভাপতি সৈয়দ মোঃ শাহজাহান, পৌরসভা মেয়র হীরেন্দ্র লাল সাহাসহ নেতৃবৃন্দ। অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় ছিলেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ শহীদুল ইসলাম।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে উপজেলা চেয়ারম্যান সৈয়দ মোঃ শাহজাহান স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তার বক্তব্যের পর উপস্থাপক উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা শহীদুল ইসলাম তাকে ধন্যবাদ জানান। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মুক্তিযোদ্ধা শাহ মোঃ মুসলিমসহ আওয়ামীলীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা মঞ্চে উঠে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার উপর চড়াও হন। তাকে মারধোর থেকে বাঁচাতে এমপি মাহবুব আলী এগিয়ে এলে তিনিও ধাক্কাধাক্কির শিকার হন।
এ ঘটনায় রাতেই মাধবপুর থানায় দ্রুত বিচার আইনে মামলা দায়ের করেন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ শহীদুল ইসলাম। মামলায় উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র শাহ মোঃ মুসলিম, উপজেলা তরুণ লীগ সভাপতি শাহ মোঃ রফিক, রফিক ভূইয়া, শাহ মোঃ তরিক, শাহ মোঃ জয়নাল, শাহ মোঃ স্বপন, শাহ মোঃ রিপন, টিপু শাহ, জাবেদ মিয়া, বিল্লাল হোসেন খান, শাহ মোঃ বিল্লাল, এমরান মিয়া, ইয়াকুব আলীসহ ২০ জনের নাম উল্লেখ করে ৪০ জনকে আসামী করা হয়।
শহীদুল ইসলাম জানান, এমপি সাহেবের উপস্থিতিতে কোন কারণ ছাড়াই তারা আমার উপর হামলা করেছে। আমি আইনের আশ্রয় নিয়েছি।
উপজেলা আওয়ামীলীগ সভাপতি ও সাবেক পৌর মেয়র মুক্তিযোদ্ধা শাহ মোঃ মুসলিম জানান, মহান স্বাধীনতা দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মহান মুক্তিযুদ্ধে মানবতা বিরোধী অপরাধে দন্ডপ্রাপ্ত সৈয়দ মোঃ কায়সারের ভাই সৈয়দ মোঃ শাহজাহান স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে জিয়াউর রহমানের নাম বার বার বলেন। পাশাপাশি অনুষ্ঠানগুলোতে মুক্তিযোদ্ধা ও আওয়ামীলীগ নেতাদের বাদ দিয়ে বিএনপি নেতাদের গুরুত্ব দেয়া হয়। এতে আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ শহীদুল ইসলামের উপর চড়াও হন। তিনি জানান, ওই নির্বাচন কর্মকর্তা ১২ বছর ধরে মাধবপুরে কর্মরত। স্বাধীনতা বিরোধীদের সাথে আঁতাত করে শহীদুল ইসলাম অনুষ্ঠান পরিচালনা করছিলেন।
মাধবপুর থানার ওসি মোল্লা মনির হোসেন জানান, আসামীদের গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।