স্টাফ রিপোর্টার ॥ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবং হবিগঞ্জ সদর, লাখাই ও শায়েস্তাগঞ্জ আসনের সংসদ সদস্য এডভোকেট মোঃ আবু জাহির বলেছেন, বিএনপি-জামায়াতের আমলে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে হ্যাট্রিক চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। দেশের অলিতে-গলিতে চলতো লুটতরাজের প্রতিযোগিতা। বেগম খালেদা জিয়া ও তার সন্তান তারেক জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাৎসহ সাধারণ মানুষের সম্পত্তি লুটপাট করেছিলেন। যে কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দায়ের করা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে জেল হাজতে রয়েছেন খালেদা জিয়া। আর বিদেশে পালিয়ে বেড়াচ্ছে তার সন্তান তারেক রহমান। বিদ্যুতের খাম্বা বাণিজ্য আর হাওয়া ভবনের অপকর্মের মাধ্যমে তারা দেশকে পরিণত করেছিল দুর্নীতিবাজদের স্বর্গরাজ্যে। তাই দেশের মানুষ দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়া বিএনপিকে ক্ষমতায় দেখতে চায় না।

তিনি বলেন, বর্তমান প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার দেশের মানুষকে ফিরিয়ে দিয়েছেন কাক্সিক্ষত শান্তি, শৃঙ্খলা আর উন্নয়ন। আমরা এখন উন্নয়নশীল জাতি। কেউ আমাদেরকে ভিক্ষুকের জাতি বলতে পারে না। সততার দিক দিয়ে বিশ্বে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন শেখ হাসিনা। তিনিই পারেন বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করতে। তাই জনগণের স্বার্থে আবারো নৌকায় ভোট দেয়ার বিকল্প নেই।

মঙ্গলবার হবিগঞ্জ সদর উপজেলার রিচি ইউনিয়নের মির্জাপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে অভিভাবকদের নিয়ে আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি’র বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।

এমপি আবু জাহির আরো বলেন, আমি রাজনীতি করি মানুষের কল্যাণের জন্য। একজন জনপ্রতিনিধি হিসেবে জনগণের পাশে থাকি। আমার নির্বাচনী এলাকার জনগণ যাতে সরকারের শতভাগ সেবা গ্রহণ করতে পারে সেজন্য দিনরাত পরিশ্রম করি। রাজনৈতিক নেতা হিসেবে এটা আমার অঙ্গীকার। আমার নির্বাচনী এলাকায় আমি যে উন্নয়ন নিয়ে এসেছি বাংলাদেশের আর কোনও এমপি তার এলাকায় এই ধরণের উন্নয়ন করতে পারেননি। ফলে হবিগঞ্জের সর্বস্তরের জনগণ আমাকে নাগরিক সংবর্ধনা দিয়েছে ঋণী করেছেন। এই ঋণ আমি শোধ করতে চাই। এর জন্য আগামী নির্বাচনে আপনাদের ভোট দোয়া ও আশির্বাদ কামনা করি।

তিনি বলেন, জননেত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক স্থাপন করেন। যাতে প্রান্তিক জনগণ প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা গ্রহণ করতে পারে। কিন্তু ২০০১ সালের পর ক্ষমতায় এসেই এই কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো বন্ধ করে দেয়। শুধু এই একটা অজুহাতে যে, এই ক্লিনিকে যারা কাজ করবে এবং যারা স্বাস্থ্যসেবা পাবে, তারা সব নৌকায় ভোট দেবে। এতেই প্রমাণিত হয় বিএনপি জনগণের সেবার জন্য নয়, তাদের ভোগের জন্য রাজনীতি করে। তিনি বলেন, আমারা আবারো সরাদেশে কমিউনিটি ক্লিনিক চালু করেছি। সেবা পাচ্ছেন প্রান্তিক জনগণ। বিএনপি আবার ক্ষমতায় আসতে পারলে আবারো বন্ধ করে দিবে এই কমিউনিটি ক্লিনিক।

পরে হবিগঞ্জ, লাখাই ও শায়েস্তাগঞ্জে ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ডের কথা তুলে ধরে আগামীতেও এই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে নৌকায় ভোট দেয়ার আহবান জানান এমপি আবু জাহির। উপস্থিত অতিথিবৃন্দ এবং স্থানীয় লোকজন হাতু তলে তার বক্তৃতার প্রতি সমর্থন জানান এবং দলমত নির্বিশেষে আগামীতেও নৌকার বিজয় নিশ্চিতে কাজ করবেন বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।

সাবেক ইউপি মেম্বার আব্দুল লতিফ খানের সভাপতিত্বে ও মির্জাপুর হাইস্কুলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি লায়ন মোঃ রফিক মিয়ার পরিচালনায় সভায় বক্তৃতা করেন ও উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মশিউর রহমান শামীম, জেলা যুবলীগ সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এডভোকেট কনক জ্যোতি সেন রাজু, পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিরাজ মিয়া, মির্জাপুর হাইস্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ডাঃ ইকবাল, হবিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মিজানুর রহমান শামীম, বারিক মিয়া সরদার, ছাবু মিয়া সরদার, সামছুল হক, সোলায়মান মিয়া, আব্দুল গণি মেম্বার, রানা রায়, সাবেক প্রধান শিক্ষক কানাই লাল দাশ, সাবেক মেম্বার আব্দুল হক, জেলা যুবলীগ নেতা শাহ আলম সিদ্দিক, লিটন মিয়া, বারিক মেয়া, সাবেক মেম্বার আব্দাল উদ্দিন খান, আব্দুল আলী, নজরুল ইসলামসহ এলাকার গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও যুব সমাজ।
পরে রাতে রিচি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় বক্তৃতা করেন সংসদ সদস্য এডভোকেট মোঃ আবু জাহির।

এতে অন্যান্যের মাঝে বক্তৃতা করেন ও উপস্থিত ছিলেন। জেলা আওয়ামী লীগের সহ সভাপতি আলহাজ্ব মোঃ আরব আলী, জেলা মৎস্যজীবী লীগের সভাপতি আব্দুর রহমান, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট আব্দুল আহাদ ফারুক, শায়েস্তাগঞ্জ পৌরসভার মেয়র মোঃ ছালেক মিয়া, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট নিলাদ্রী শেখর পুরকায়স্থ টিটু, জেলা যুবলীগের সভাপতি আতাউর রহমান সেলিম, পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাক মশিউরর রহমান শামীম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল মুকিত, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সাইদুর রহমান, রিচি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মহিউদ্দিন চৌধুরী পারভেজ, উপজেলা শ্রমিক লীগের সভাপতি তাজুল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি শেখ সেবুল আহমেদ, সাধারণ সম্পাদক মনির হোসেন সুমনসহ রিচি ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীসহ বিশিষ্ট মুরুব্বিয়ন।