স্টাফ রিপোর্টার ॥ বসুন্ধরা খাতা কালের কণ্ঠ জাতীয় স্কুল বিতর্কে সিলেট বিভাগে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সিলেট জেলার চ্যাম্পিয়ন ব্লু বার্ড স্কুল এন্ড কলেজ।

শুক্রবার (১৩ জুলাই) দুপুরে হবিগঞ্জ প্রেসক্লাব হলরুমে ফাইনাল রাউন্ডে তারা সুনামগঞ্জের সাউথ ওয়েস্ট সালেহ আহমেদ স্কুল এন্ড কলেজকে পরাজিত করে।

সকাল ১০টায় হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবে ‘শুধুমাত্র প্রশাসনের সুনজরই পারে মাদক রুখতে’ বিষয় নিয়ে সেমিফাইনালে অংশ নেয় হবিগঞ্জের বিকেজিসি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় এবং সিলেটের ব্লু বার্ড স্কুল এন্ড কলেজ। তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপুর্ন লড়াইয়ে জয়লাভ করে পক্ষের দল ব্লু বার্ড স্কুল এন্ড কলেজ। অপর সেমিফাইনালে একই বিষয়ে অংশ নেয় দি ফ্লাওয়ার্স কেজি এন্ড হাইস্কুল মৌলভীবাজার। সেখানে বিপক্ষের দল সুনামগঞ্জ জয়লাভ করে। ফাইনালে ব্লু বার্ড স্কুল এবং সুনামগঞ্জের সাউথ ওয়েস্ট সালেহ আহমেদ স্কুল এন্ড কলেজ অংশ নেয় ‘বর্তমান পৃথিবীর সংকট ক্ষুধার নয়, পরিবেশের’ বিষয়কে সামনে রেখে। সেখানে পক্ষের দল ব্লু বার্ড স্কুল এন্ড কলেজ জয়লাভ করে চ্যাম্পিয়ন হয়। সেরা বক্তা নির্বাচিত হন বিজয়ী দলের দলনেতা অর্নব কান্তি সিংহ।

প্রতিযোগিতা শেষে কালের কণ্ঠ সিলেটের বিভাগীয় ব্যুরো প্রধান আহমেদ নূরের সভাপতিত্বে এবং হবিগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি শাহ ফখরুজ্জামানের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন হবিগঞ্জ-৩ আসনের এমপি এডভোকেট মোঃ আবু জাহির।

বিশেষ অতিথি ছিলেন কালের কণ্ঠের সম্পাদক এবং জনপ্রিয় কথা সাহিত্যিক ইমদাদুল হক মিলন, হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) ফজলুল জাহিদ পাভেল, হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব শামীম আহছান ও হারুনুর রশিদ চৌধুরী, সরকারি বৃন্দাবন কলেজের সহকারী অধ্যাপক ড. সুভাষ চন্দ্র দেব, হবিগঞ্জ জেলা বিতর্ক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সুলতান মাহমুদ, বসুন্ধরা গ্র“পের পোর্ট পোলিও ম্যানেজার (পেপার প্রোডাক্ট) ইয়াছির খান মোহাম্মদ এবং হবিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রাসেল চৌধুরী।

উপস্থিত ছিলেন ধর্মঘর ডিগ্রী কলেজের অধ্যক্ষ অধ্যাপক আলী আজগর, বিকেজিসি সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুধাংশু কর্মকার, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর হবিগঞ্জের সহকারী পরিচালক মো. আমিরুল ইসলাম মাসুদ, বিয়াম ল্যাবরেটরী স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ সৈয়দা রওশন সুলতানা, কবি তাহমিনা বেগম গিনি, রোটরিয়ান বাদল রায়, এডভোকেট আব্দুল মোছাব্বির বকুল, কালের কণ্ঠের নরসিংদী প্রতিনিধি মনিরুজ্জামান, সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি শামছ শামীম, শুভ সংঘের সংগঠক জাকারিয়া জামান, হবিগঞ্জ টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি প্রদীপ দাশ সাগর, সাধারণ সম্পাদক মোঃ ছানু মিয়া, এডভোকেট মোঃ আবু জাহির উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লায়ন মোঃ আসাদুজ্জামান, ঊষার প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক শাহ সৈয়দুল হক সাঈদ, যায়যায়দিনের হবিগঞ্জ প্রতিনিধি মোঃ নূরুল হক কবীর, নিউজ টোয়েন্টিফোরের জেলা প্রতিনিধি শ্রীকান্ত গোপ, দৈনিক খোয়াইর বার্তা সম্পাদক মঈন উদ্দিন আহমেদ, কবি অপু চৌধুরী, এশিয়ান টিভির জেলা প্রতিনিধি এসএম সুরুজ আলী, বাংলানিউজের জেলা প্রতিনিধি বদরুল আলম, ইকরা বাংলাদেশের প্রধান শিক্ষক মুফতি আনোয়ার আমিন প্রমুখ।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এডভোকেট মোঃ আবু জাহির এমপি বলেন, হবিগঞ্জের বিতর্ক হারিয়ে যাচ্ছিল। এখন নতুন জাগরণ সৃষ্টি হয়েছে। একজন বিতার্কিক নিজের দক্ষতায় জেলার একজন দূত হিসাবে কাজ করে। বিতর্কের কারণে বিতর্ক নয়, সব সময় সত্যকে সামনে নিয়ে অগ্রসর হতে হবে। যদি বিতর্ক চর্চা সবার মাঝে ছড়িয়ে দেওয়া যায় তাহলে আমাদের আগামী প্রজন্ম আরো শানিত এবং আলোকিত হবে। বিতর্ক চর্চার পাশাপাশি আমাদের মানুষকে আরো উচ্চ শিক্ষিত করতে হবে।

বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় বরেন্য কথা সাহিত্যিক ও কালের কণ্ঠের সম্পাদক ইমদাদুল হক মিলন বলেন, আমাদের সন্তানদেরকে প্রকৃত মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। মনে রাখতে হবে মানুষ আলোকিত হয় শিক্ষা, জ্ঞান এবং আলোতে। সন্তানদেরকে মানুষ হওয়ার পথ এবং জ্ঞানী হওয়ার পথ দেখাতে হবে। মনে রাখতে হবে আলোকিত মানুষ হয় জ্ঞানে। বিতর্ক জ্ঞানকে আরো শানিত করে। তবে মনে রাখতে হবে, পৃথিবীর সত্যের উপর দাঁড়িয়ে আছে। সত্য হলো আলো, সত্য হলো কল্যাণ। সত্যই মানুষকে গড়ে তুলে আলোকিত মানুষ হিসেবে।

তিনি বিতর্ক চর্চা এবং উৎকর্ষতা সাধনের জন্য বিতর্ক ফাউন্ডেশন গড়ে তুলা হবে বলে অনুষ্ঠানে ঘোষণা দেন।

অতিথিবৃন্দ ক্ষুধে বিতার্কিকদের বিতর্ক উপভোগ করে তাদের প্রসংশা করেন এবং উপস্থাপনের ভাষাগত ত্র“টি নিয়ে তারা কথা বলেন। প্রেসক্লাব মিলনায়তনটি এই বিতর্ক প্রতিযোগিতাকে কেন্দ্র করে কানায় কানায় পূর্ণ হয়ে যায়। উপস্থিত সবাইকে বসুন্ধরা খাত এবং ইমদাদুল হক মিলনের জনপ্রিয় উপন্যাস ‘নয়মাস’ বিতরণ করা হয়। কালের কণ্ঠের পাঠক ফোরাম শুভ সংঘের স্বেচ্ছাসেবকরা অনুষ্ঠানটি সুশৃঙ্খল করতে দায়িত্ব পালন করেন।