এটিএম সালাম, নবীগঞ্জ থেকে ॥ নবীগঞ্জ উপজেলার করগাঁও ইউনিয়নের গুমগুমিয়া গ্রামের মৃত্যু পথযাত্রী পল্লী চিকিৎসক মানবিক আবেদন করে প্রাণ ভিক্ষা চেয়ে শহরে লিপলেট বিতরন করছে তার সতীর্থরা। তার সহকর্মী, বন্ধু-বান্ধব, এলাকাবাসীসহ দেশবাসীর প্রতি উক্ত লিপলেট এ শিরোনাম দিয়েছেন প্রাণ ভিক্ষার আবেদন।
সেখানে টিবলু দাশ লিখেছেন ০১-০৭-১৯৮২ইং সনে নবীগঞ্জ উপজেলার করগাওঁ ইউনিয়নের গুমগুমিয়া গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন। তার বাবা হরেন্দ্র দাশ, মা-প্রতিমা রানী দাশ। জন্মের পর সকলের আদর যতেœ বড় হয়েছে। হাসিঁ খুশিতে ভড়পুর ছিল পরিবার।
২০০১ইং সনে নবীগঞ্জ ডিগ্রী কলেজে ভর্তি হয়ে দক্ষতার সাথে দু’ বছর লেখাপড়া করেছেন। উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে যখন এগিয়ে যাচ্ছিলো, তখনই শরীরে অসুস্থতা অনুভব করে টিবলু দাশ। এক পর্যায়ে শরীরের অবস্থা অবনতির দিকে গেলে বন্ধ হয়ে যায় লেখাপড়া। ভেস্তে যায় তার সেই স্বপ্ন। এভাবে ১০টি বছর অতিবাহিত করার পর ২০১১ সালে উন্নত চিকিৎসার জন্য চলে যায় ইন্ডিয়াতে। সেখানে ডাক্তার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ধরা পড়ে তার দু;টি কিডনীই বিকল। ভারতের বেলুরের সিএমসি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে তাঁকে নেয়া হয়। কিন্তু সব হাসপাতালের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের পরামর্শ কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশন করা ছাড়া বিকল্প নেই।
কিডনি ট্রান্সপ্লান্টেশনের জন্য ভারতের বেলুরের হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ১৫/২০ লক্ষ টাকার প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন। যা টিবলু দাশের পরিবারের পক্ষে আদৌ সেই ব্যয় বহন করার কোন অবলম্বন নেই। ইতিমধ্যে তার চিকিৎসা করাতে গিয়ে নিঃস্ব হয়ে গেছেন তার পরিবার। অসহায় হয়ে জীবন মৃত্যুর সন্নিক্ষনে এসে ডাক্তারের পরামর্শে প্রায় সাড়ে ৩ বছর ধরে ডায়ালাইসিস করে আসছেন। সপ্তাহে দু’বার ডায়ালাইসিস করাতে গিয়ে ব্যয় হচ্ছে ৬/৮ হাজার টাকা।
মাঝে মধ্যে শরীরের অবস্থা অবনতি ঘটলে এককালীন ৪০/৫০ হাজার টাকার প্রয়োজন হয়। এ যাবৎ ব্যয় গুলো বন্ধু বান্ধন, আত্মীয় স্বজনরা যোগিয়েছেন। অনেক সময় টাকার অভাবে ডায়লাইসিস করানো সম্ভব হয়না। ফলে অনাগত মৃত্যুর পথে হাটছেন টিবলু দাশ। নিশ্চিত মৃত্যু জানার উপলব্দি কত যন্ত্রনা ও বেদনাদায়ক কে না জানে।
টিবলু দাশ তার প্রাণ ভিক্ষার আবেদনে বলেন, ফাসিঁর মঞ্চে দাড়িয়ে নিশ্চিত মৃত্যু জেনে হাতছানি দিয়ে বাচাঁর আকুতি জানায় ফাসিঁর আসামী। তেমনিভাবে মৃত্যুর দরঝায় দাড়িয়ে সরকার, প্রবাসী, বন্ধু বান্ধবসহ দেশবাসীর নিকট প্রাণ ভিক্ষার আকুতি জানিয়ে বাজারে লিপলেট ছেড়েছেন টিবলু দাশ। তার লেখা আকুতি লিপলেট পড়ে অনেকেই চোখেঁ জল ধরে রাখতে পারবে না বলে জানিয়েছেন লিপলেট প্রাপ্ত কয়েকজন। এর আগেও অসুস্থ্য টিবলু দাশের মা প্রতিমা রানী দাশ তার ছেলে টিবলু দাশের উন্নত চিকিৎসার জন্যে সরকার ও হৃদয়বান মানুষের কাছে সাহায্যের আকুতি জানিয়ে ছিলেন। টিবলু দাশের বিশ^াস প্রাণ ভিক্ষার আবেদনখানা মানুষের কাছে পৌছলে এবং পত্রিকায় প্রকাশ হলে সরকার ও বিত্তবান মানুষগণ এগিয়ে আসবে। সাহায্য পাঠানোর ঠিকানা: টিবলু দাশ, এ/সি নং- ৬৩০৬১০২৪১১৮০১০০১, ব্র্যাক ব্যাংক, নবীগঞ্জ।