মনিরুল ইসলাম শামিম, বাহুবল থেকে : বাহুবলে এক বছরেও যুব সংহতি নেতা রফিক হত্যা মামলার তদন্ত শেষ হয়নি। থানা পুলিশের পর জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ দীর্ঘ সময় ধরে মামলাটি তদন্ত করে চলেছে। কিন্তু শ্রমজীবী এ মানুষটিকে কারা, কেন নির্মাম ভাবে হত্যা করলো- এ প্রশ্নের উত্তর আজও জানা যায়নি। এ অবস্থায় নিহতের পরিবারের সদস্যরা বিচার পাওয়া-না পাওয়া নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন। এদিকে, তদন্তকারী কর্মকর্তা দাবি করেছেন, তদন্ত শেষ পর্যায়ে আছে, মার্চ মাসের যে কোন দিন আদালতে প্রতিবেদন দেয়া হবে।
গত বছরের ২৮ ফেব্র“য়ারি দুপুরে বাড়ি থেকে ২ কিলোমিটার দূরবর্তী রেললাইনের পাশ থেকে তার খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়।
উপজেলার পশ্চিম জয়পুর গ্রামের মৃত আবদুুর রহমানের ছেলে স্থানীয় মিরপুর ইউনিয়ন যুবসংহতির সভাপতি রাজমিস্ত্রী রফিকুল ইসলামকে গত বছরের ২৭ ফেব্র“য়ারি রাত ২টার দিকে অজ্ঞাত পরিচয় এক ব্যক্তি ঘর থেকে ডেকে নিয়ে যায়। ভোররাত পর্যন্ত সে ঘরে ফিরে না আসায় পর দিন সকালে খোজাখুজির এক পর্যায়ে বাড়ির পাশ থেকে রক্তমাখা গেঞ্জি, হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত কুড়াল এবং পাশের একটি পুকুর থেকে তার পরনের লুঙ্গি উদ্ধার করা হয়। দুপুরে বাড়ি থেকে ২ কিলোমিটার দূরবর্তী বারআউলিয়া গ্রামে রেললাইনের কাছ থেকে তার খণ্ডিত লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় জড়িত সন্ধেহে পুলিশ পার্শ্ববর্তী বাড়ির জাহির মোল্লা (৪৫) ও তার বড় ভাই আবুল কালামকে (৪৮) আটক করে। নিহতের ভাই হাফেজ সাদেকুর রহমান বাদি হয়ে বাহুবল মডেল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। প্রথমে মামলাটি বাহুবল মডেল থানা পুলিশ দীর্ঘদিন তদন্ত করে। পরে বাদির আবেদনে মামলাটি জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশে হস্তান্তর করা হয়।
মামলার বাদি হাফেজ সাদেকুর রহমান বলেন, আজ এক বছর হয়ে গেল আমার ভাইকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা জানতে পারলাম না কে এবং কেন আমার নিরিহ ভাইটিকে হত্যা করল। বিচার পাওয়া তো দূরের কথা এ প্রশ্নেরই উত্তর কোনদিন জানতে পারব কি না জানি না। তিনি আরো বলেন, গ্রেফতারকৃত জাহির ও কালাম জামিনে মুক্তি পাওয়ার পর থেকে মামলা তোলে নেয়ার জন্য নানান ভাবে হুমকি দিয়ে চলেছে। তিনি বলেন, আমার ভাই রফিক ছিলেন আমাদের পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি। তার আয়ের উপর নির্ভরশীল ছিলাম আমি, আমার মা, আমার এক প্রতিবন্ধী বোন, আমার ভাইয়ের স্ত্রী এবং তার ৩ সন্তান। আমার ভাইয়ের হত্যাকান্ডের পর থেকে আমি সহ ৭ সদস্যের পরিবার নিয়ে অনাহারে-অর্ধাহারে চরম দুঃসময় অতিবাহিত করছি।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের এসআই আব্দুল করিম ঘটনাটিকে নির্মম হত্যাকান্ড উল্লেখ করে বলেন, তদন্তে মামলার এজাহারভূক্ত আসামী ছাড়াও আরো কয়েকজন জড়িত থাকার প্রমাণ পাওয়া গেছে। এছাড়া হত্যার কারণও জানা গেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই সবকিছু প্রকাশ করা যাচ্ছে না। জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, মামলার তদন্ত শেষ পর্যায়ে আছে। মার্চ মাসের যে কোন সময় চার্জসীট আদালতে প্রেরণ করা হতে পারে।