শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:১৪ অপরাহ্ন
সানিউর রহমান তালুকদার / উত্তম কুমার পাল হিমেল, নবীগঞ্জ থেকে॥ নবীগঞ্জ উপজেলার ইনাতগঞ্জ বাজারের মুদি ব্যবসায়ী রজত রায় পবিত্র ক্বাবা শরীফের ছবির উপর মুর্তির ছবি প্রতি স্থাপন করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে আপলোড করায় এলাকার ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সংবাদটি ফেসবুকের মাধ্যমে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়লে সাথে সাথে হাজার হাজার জনতা ইনাতগঞ্জ মধ্য বাজারে রজত রায়ের দোকানের সামনে অবস্থান নেয়। উত্তেজিত জনতা রজতের ফাঁসির দাবিতে করে দফায় দফায় বিক্ষোভ মিছিল করে।
এ সময় মিছিলকারীরা রজতের দোকান লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। স্থানীয় নেতৃবৃন্দ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্ঠা করেও পারেনি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পরে বিক্ষোভকারীরা রজত এর গ্রামে বাড়িতে গিয়েও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে।
(১৯ ফেব্রুয়ারি) রোববার দুপুরে রজত রায় ইনাতগঞ্জ বাজারে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পবিত্র ক্বাবা শরিফের উপর (হনুমানের) মুর্তি প্রতিস্থানপন করে। রজত রায় মধ্যসমত গ্রামের মৃত রন রায়ের পুত্র। খবর পেয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা কর্মকর্তা তাজিনা সারোয়ার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) জিতেন্দ্র কুমার নাথ ও নবীগঞ্জ থানার ওসি এম,এম আতাউর রহমান ঘটনাস্থল ইনাতগঞ্জ বাজারে যান।
এ সময় তিনি উত্তেজিত জনতার চাপের মুখে চন্ডিপুর গ্রামের আখল উল্লার বাড়ি থেকে বিকেল সাড়ে ৪ টার সময় রজত রায়কে করে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে আসেন। এ সময় উত্তেজিত জনতা প্রশাসনের কাছে রজতের ফাঁসি দাবী জানালে জনতার উদ্যেশ্যে ওসি বলেন, ধর্মীয় অনুভূতির উপর আঘাত আনার অপরাধে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
তার বিরুদ্ধে আইনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ব্যাপারে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সবার প্রতি তিনি আহবান জানান। এ ব্যাপারে স্থানীয় ইউপির বর্তমান চেয়ারম্যান বজলুর রশীদ বলেন, এই ঘটনার আমি তীব্র নিন্দা জানাই। পাশাপশি তার সর্বোচ্চা শাস্তি ও দাবী জানাই। সাবেক চেয়ারম্যান মাসুদ আহমদ জিহাদী তিনি বলেন, পবিত্র ক্বাবা শরীফের ছবির উপর মুর্তি রেখে রজত যে দৃষ্টতা দেখিয়েছে। এক জন মুসলমান হিসেবে কোন ভাবেই মেনে নেয়া যায়না। আমি তার সর্বচ্চো শাস্তির দাবী জানাই।
মোস্তফাপুর আলিম মাদ্রাসার সুপার মাওলানা আব্দুন নুর বলেন, তার এমন শাস্তি আমি চাই, যাতে ভবিষ্যতে অন্য কেউ ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত আনতে না পারে। বিক্ষোভকারী রুপধন মিয়া বলেন, এই কুলাঙ্গাররের ফাঁসি চাই। এদিকে ঘটনার খবর পেয়ে বিকেল ৫টার দিকে স্থানীয় হাজার হাজার লোকজন বিক্ষোভ মিছিল সহকারে ইনাতগঞ্জ বাজার প্রদক্ষিণ করে ইনাতগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রতিবাদ সভায় মিলিত হয়।
খবর পেয়ে হবিগঞ্জের পুলিশ সুপার জয়দেব কুমার ভদ্র ও নবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলমগীর চৌধুরী বিকেলে ইনাতগঞ্জ বাজারে ছুটে যান। এ সময় তিনি পুলিশ সুপার প্রতিবাদকারীদের উদ্দেশ্য বলেন, আইনের উর্ধ্বে কেউ নয়। ইতিমধ্যে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। আইনশৃংখলা পরিস্থিতি যাতে বিঘ্ন না ঘটে সে দিকে সবাইকে সজাগ দৃষ্টি রাখার আহবান জানান।
