এম এ আই সজিব ॥ মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় লাখাই উপজেলার রাজাকার কমান্ডার লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আমলে নিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুন্যাল-১। আগামী ২১ জুন মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে। বুধবার একই মামলার ওই দুই আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল করে গ্রেফতারি পরোয়ানার আবেদন জানান প্রসিকিউটর শাহিদুর রহমান ও রেজিয়া সুলতানা চমন। শুনানি শেষে অভিযোগ আমলে নিয়ে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেন চেয়ারম্যান বিচারপতি মোহাম্মদ আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইবুন্যাল। একাত্তরে লাখাই থানার ফান্দাউক (বর্তমান ব্রহ্মণবাড়িয়া জেলা) ইউনিয়ন রাজাকার কমান্ডার সে সময়কার মুসলিম লীগ নেতা মো. লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা,আটক, অপহরণ, নির্যাতন, ধর্ষণ ও লুটপাটের সাতটি মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাশাপাশি তিন থানা হবিগঞ্জ জেলার লাখাই,ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর ও কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রামে এসব অপরাধ সংঘটিত করেন লিয়াকত আলী। এর মধ্যে রয়েছে লাখাইয়ের কৃষ্ণপুরে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ১২৭ জন এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ফান্দাউকে নিরীহ নারী-পুরুষকে হত্যা, ধর্ষন ও লুটপাটের অভিযোগ।
গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর তাদের দু’জনের বিরুদ্ধে তদন্তের চূড়ান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ করেন ট্রাইবুন্যালের তদন্ত সংস্থা। ওইদিনই এ তদন্ত প্রতিবেদন ট্রাইবুন্যালের প্রসিকিউশনের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর ভিত্তিতে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ তৈরি করে ট্রাইবুন্যালের দাখিল করেন প্রসিকিউশন।
৩১৩ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে ১৭৯ পৃষ্ঠার দালিলিক প্রমাণ, ৭২ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদন এবং ৬২ পৃষ্ঠার সাক্ষীদের জবানবন্দি রয়েছে।
এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. নূর হোসেন ২০১৪ সালের ৫ নভেম্বর থেকে ২৭ ডিসেম্বর পর্যন্ত তদন্তকাজ সম্পন্ন করেন।
ঘটনার ২৭ জন ও জব্দ তালিকার ২ জনসহ মোট ২৯ জন সাক্ষী লিয়াকত আলীর বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবেন।১৯৭১ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কলেজের ছাত্র ও মুসলিম লীগের নেতা লিয়াকত আলী ফান্দাউক ইউনিয়নে রাজাকার কমান্ডারের দায়িত্বে ছিলেন। স্বাধীনতার পর দীর্ঘদিন পালিয়ে ছিলেন তিনি। পরে এলাকায় ফিরে একসময় লাখাই উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও মুড়াকরি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন।