পাবেল খান চৌধুরী, হবিগঞ্জ: হবিগঞ্জের বাহুবলে ৪ শিশু হত্যা নিয়ে দেশব্যাপী তোলপাড় চলছে। সাধারণ মানুষের বিবেককে নাড়া দিয়েছে এ নিষ্ঠুর হতাকান্ড। নির্মম এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছেন সাধারণ মানুষ। কেউই ৪ শিশুর এ ধরণের মৃত্যুকে মেনে নিতে পারছেন না। পারিবারিক বিরোধ থাকতে পারে, তাই বলে নিষ্পাপ শিশুদের দোষ কোথায়?

কারও ক্ষতি করতে পারে এমন বয়স কোনো শিশুরই হয়নি। তা হলে কেন তাদের এমন করুণ পরিণতি ভোগ করতে হয়েছে? এমন প্রশ্ন সাধারণ মানুষের মনে ঘুরপাক খাচ্ছে। খুনিদের সর্বোচ্চ শাস্তি হলে কিছুটা হলেও মনে শান্তি পাবে শিশুদের স্বজনরা।

এদিকে হবিগঞ্জ জেলায় শুধু ৪ শিশুই নয়। ইতোপূর্বে পৃথক দু’টি ঘটনায় আরও ৩ শিশু নির্মমতার বলি হয়েছে। এই ৪ শিশুসহ হবিগঞ্জ জেলায় মোট ৭জন শিশু নির্মমভাবে খুন হয়েছে গত এক বছরে।

গত বছরের ছয় ডিসেম্বর সদর উপজেলার রাজিউড়া ইউনিয়নের বালিকান্দি গ্রামের নয়ন চৌধুরীর ছেলে ৭ম শ্রেণির স্কুল ছাত্র লায়েছ চৌধুরীকে নির্মমভাবে খুন করা হয়। তার শরীরে ৪০টি ধারালো অস্ত্রের আঘাত ছিল।

হত্যাকারীরা এতই নিষ্ঠুর ছিল যে, শিশু লায়েছের বুক বেধ করে পিঠ দিয়ে বেরিয়ে গেছে। এ নিষ্ঠুর হত্যাকান্ডে স্কুলের শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষ মানববন্ধন করে খুনিদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানায়। এ ঘটনায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন লায়েছের মা।

হত্যাকান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে প্রতিবেশী রিপন নামে একজনকে আটক করে পুলিশ। পরে মামলা তদন্ত শেষে পুলিশ শুধুমাত্র রিপনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। অন্য সব আসামিকে অব্যাহতি দেয়। পুলিশের দাখিল করা চার্জশিট মেনে নিতে পারেননি লায়েছের পরিবার। পাবিবারিক বিরোধের জের ধরেই লায়েছকে খুন করা হয় বলে চার্জশিটে উল্লেখ করা হয়। লায়েছকে যেভাবে খুন করা হয়েছে তাতে শুধুমাত্র ১ জন ব্যক্তি জড়িত থাকতে পারে, তা বিশ্বাস করছেন না অনেকেই।

এর আগে গত বছরের ২২ মার্চ নবীগঞ্জে দু’শিশুকে পুকুরে ফেলে হত্যা করে তাদের পিতা। ওই ঘটনাটি এখনো হবিগঞ্জ গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) তে তদন্তাধীন আছে। সাধারণ মানুষের একটাই দাবি হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হউক।