বাহুবল (হবিগঞ্জ) প্রতিনিধি:
হবিগঞ্জের বাহুবলে অবরোধ চলাকালে বাস পুড়ানোর ঘটনায় ২০ দলীয় জোট নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে নয়া মামলা দিয়েছে পুলিশ। চুনারুঘাট থানার এসআই হারুন আল রশিদ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মঙ্গলবার (২০ জানুয়ারী) রাতে বাহুবল মডেল থানায় মামলাটি দায়ের করেন। অপরদিকে, পৃথক দুটি মামলা (পুলিশ এসল্ট ও দ্রুত বিচার আইনে) পুলিশের দায়েরকৃত অপর একটি মামলায় ২০ দলীয় জোটের অর্ধশত নেতাকর্মীরা (২১ জানুয়ারী) আদালত থেকে জামিন লাভ করেছেন।

পুলিশ জানায়, গত সোমবার সন্ধ্যা ৭টায় (১৯ জানুয়ারি) ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বাহুবল উপজেলার হাফিজপুর নামক স্থানে ‘নাসিরাদ পরিবহনের’ বাস (ঢাকা মেট্রো-ব ১৪-১২৬৯) এ দুর্বৃত্তরা অগ্নিসংযোগ করে। এতে বাসটির অধিকাংশ পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ময়মনসিংহ-সিলেট রোডে চালিত বাসটির ইঞ্জিন বিকল হওয়ায় ওই স্থানে দাঁড় করিয়ে মেরামত করা হচ্ছিল। বাসটির মালিক সিলেট জেলার দক্ষিণ সুরমা উপজেলার মাহমুদপুর গ্রামের মৃত জমশেদ আলীর পুত্র এমরান হোসেন ঝুনু জানান, বাসের দুই হেলপার দু’জন ইঞ্জিনিয়ারের সহায়তায় বাসটি মেরামত করছি। এ সময় দু’টি সিএনজি অটোরিকশা যোগে দুর্বৃত্তরা ঘটনাস্থলে এসে হেলপার ও ইঞ্জিনিয়ারদের মারধোর করে। এক পর্যায়ে বাসটিতে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা পালিয়ে যায়।

এ ঘটনার প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার রাতে চুনারুঘাট থানার এসআই হারুন আল রশিদ বাদী হয়ে বাহুবল মডেল থানায় ২০ দলীয় জোট সমর্থিত নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিশেষ ক্ষমতা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় ১২ জনের নাম উল্লেখপূর্বক আরো অজ্ঞাত ১০/১৫ জন লোককে আসামী করা হয়। তবে এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি।

এদিকে, দ্রুত বিচার আইনে পুলিশের দায়েরকৃত অপর একটি মামলায় বুধবার (২১জানুয়ারী) আদালত থেকে জামিন লাভ করেছেন বাহুবল উপজেলা বিএনপি সভাপতি, জামায়াত আমীর, মডেল প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদকসহ ২০ দলীয় জোটের অর্ধশত নেতাকর্মী। হবিগঞ্জের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রোকেয়া আক্তার এর আদালত শুনানী শেষে তাদের জামিন আবেদন মঞ্জুর করেন। আশরাফুল বারী নোমান, মঞ্জুর উদ্দিন আহমেদ শাহিন, রমিজ আলী, মিজানুর রহমান চৌধুরীসহ অর্ধশতাধিক আইনজীবী জামিন আবেদনের পক্ষে শুনানীতে অংশগ্রহণ করেন।

উল্রেখ্য, গত ৫ জানুয়ারি উপজেলার মিরপুরে বিক্ষোভ মিছিলকে কেন্দ্র করে পুলিশের সাথে ২০ দলীয় জোট নেতাকর্মীদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ প্রেক্ষিতে বাহুবল মডেল থানার এসআই মমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে দ্রুত বিচার আইনে এবং অপর এক দারোগা বাদী হয়ে পৃথক এসল্ট মামলা দায়ের করেন। দ্রুত বিচার আইনে দায়েরকৃত মামলায় পুলিশ করাঙ্গী নিউজ টুয়েন্টিফোর ডটকম-এর সম্পাদক সিদ্দিকুর রহমান মাসুম, ব্যবসায়ী তোতা মিয়া ও গেদু মিয়াকে গ্রেফতার করে। তারা পরবর্তীতে আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান। এ অবস্থায় গত ১২ জানুয়ারি বাহুবল থানা পুলিশ দ্রুত বিচার আইনে দায়েরকৃত মামলায় বাহুবল উপজেলা বিএনপি সভাপতি আলহাজ্ব আকদ্দছ মিয়া বাবুল, উপজেলা জামায়াতের আমীর কাজী আব্দুর রউফ বাহার, বাহুবল মডেল প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক শামছুদ্দিন সহ ২০ দলীয় জোটের ৫৪ নেতাকর্মীকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জসীট প্রদান করে।