এম এ আই সজিব, হবিগঞ্জ থেকে : হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলার সুন্দ্রাটিকি গ্রামে চার শিশুকে নির্মমভাবে খুন করেছে একই গ্রামের মানুষ নামের কিছু অমানুষ। এর পেছনে পারিবারিক দন্ধ নাকি অন্য কোনো কারণ রয়েছে সেটি এখনো পরিষ্কার নয়। তবে শিশুদের স্বপ্ন যে কুড়িতেই ছিল ঝরে গেল সেই ক্ষতি তো অপূরণীয়। যা কেউ চাইলেও এনে দিতে পারবে না ?
এই চার শিশুরই ছিল আলাদা স্বপ্ন। কেউ পুলিশ অফিসার, কেউ ডাক্তার, কেউ সরকারি চাকরীজীবী, কেউ আলেম হতে চেয়েছিল। কারো স্বপ্ন ছিল চাকরির প্রথম বেতনের টাকায় মাকে কিনে দেবে শাড়ি। মায়ের সেই দিনটি আর কখনোই আসবে না। হাসি ফুটবে না আর কখনোই সেই মায়ের মুখে।
বহুবলের সুন্দ্রাটিকি গ্রামের ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে সুন্দ্রাটিকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২য় শ্রেণীর ছাত্র জাকারিয়া শুভ (৮), আবদাল মিয়ার ছেলে ১ম শ্রেণীর ছাত্র মনির মিয়া (৭), আব্দুল আজিজের ছেলে ৪থ শ্রেণীর ছাত্র তাজেল মিয়া (১০) ও সুন্দ্রাটিকি আনোয়ারুল উলুম ইসলামিয়া মাদরাসার নুরানি ১ম শ্রেণীর ছাত্র আব্দুল কাদিরের ছেলে ইসমাইল মিয়া (১০)। শুভ, মনির, তাজেল ও ইসমাইল একে অপরের চাচাতো ভাই।
পরিবারের সদস্যরা জানান, জাকারিয়া শুভ বড় হয়ে পুলিশ অফিসার হতে চেয়েছিল। স্কুলে ভর্তি করার পর থেকে সে পুলিশ অফিসার হয়ে দেশের অপরাধীদের ধরতে চেয়েছিল।
শুভ দাদী মরহম চান কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘আমার নাতিদের অনেক স্বপ্ন ছিল। কিন্তু মানুষ নামের ঐ অমানুষ খুনিরা তাদের সব স্বপ্ন নষ্ট করে দিল।
শুভ সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘শুভকে স্কুলে ভর্তি করার পর থেকে বিভিন্ন সময় সে আমাকে বলত, দাদী আমি পুলিশ হবো, চোর ডাকাতকে ধরমো।
সুন্দ্রাটিকি শুভ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা নূরে জান্নাত শেফা বলেন, ‘শুভ খুবই মেধাবী একটা ছেলে ছিল। ক্লাসে তার রোল ছিল দুই। শুধু শুভই নয়, তাজেল, মনির ও ইসমাইল ও মেধাবী ছিল। তাজেলের মা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, তার ছেলে প্রায়ই বলতো, সে বড় হয়ে সরকারি চাকরি করবে। চাকরি করে আমাকে শাড়ি কিনে দেবে।
মনির বোন শিফা আক্তার বলেন, মনির প্রথম শ্রেণীতে পড়ত। মনিরের বয়স অনেক কম। তাকে আমরা ডাক্তার বানাতে চেয়েছিলাম।
ইসমাইল মিয়া মাদরাসার শিক্ষার্থী । তার বাবা-মা এর তাকে মাওলানা হিসেবে দেখতে চেয়েছিলেন। সে জন্য তাকে চলতি বছর সুন্দ্রাটিকি আনোয়ারুল উলুম ইসলামিয়া মাদরাসায় ভর্তি করা হয়। ১০ বছর বয়সী ওই শিশু আগে সুন্দ্রাটিকি সরকারি প্রাইমারী স্কুলে পড়ত। এমটাই জানিয়েছেন ইসলাইলের বাবা আব্দুল কাদির। তিনি জানান, তার দুই ছেলে। বড় ছেলেকে প্রথমেই মাদরাসায় ভর্তি করান। ছোট ছেলেকে স্কুলে ভর্তি করান। পরে তাকে মাওলানা করার আশায় এবার মাদরাসায় ভর্তি করান।
প্রসঙ্গত, গত ১২ ফেব্র“য়ারি সন্ধ্যায় নিখোঁজ হয় সুন্দ্রাটিকি গ্রামের চার শিশু শুভ, মনির, তাজেল ও ইসমাইল। তারা সবাই চাচাতো ভাই।
পাঁচদিন পর ১৭ ফেব্র“য়ারি সকালে গ্রাম থেকে প্রায় ১ কিলোমিটার দূূরের বালু একটি ক্ষেতের জমি থেকে মিশ্রিত মাটি-চাপা অবস্থায় ওই চার শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। এ সময় এলাকার মানুষও লাশ উদ্ধারে পুলিশকে সহযোগিতা করে।
এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত সন্দেহে সুন্দ্রাটিকি গ্রামের বাসিন্দা আবদুল আলী (বাগল মিয়া) (৬০), তার ছেলে জুয়েল (২০), রুবেল (১৮), একই গ্রামের বাসিন্দা আরজু (৪০), বশির (২৪) ও সালেহ আহমদ নামে ৬ জনকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ।
সম্পাদক মন্ডলীর সভাপতি : মো: আব্দুর রকিব
সম্পাদক ও প্রকাশক: সাখাওয়াত হোসেন টিটু
সহযোগী সম্পাদক : তোফাজ্জল হোসেন অপু, ব্যবস্থাপনা সম্পাদক : গাজীউর রহমান ইমরান
বার্তা সম্পাদক : কামরুজজামান আল রিয়াদ, নির্বাহী সম্পাদক : মো: জালাল উদ্দিন রুমী।
অফিস-১ : উদয়ন আবাসিক এলাকা শায়েস্তাগঞ্জ, হবিগঞ্জ।
আঞ্চলিক অফিস : নূরপুর হাইস্কুল রোড, শায়েস্তাগঞ্জ, হবিগঞ্জ।
নিউজ প্রেরনের জন্য e-mail : shaistaganjnews@gmail.com
Web site- www.shaistaganj.com
মোবাইল নাম্বার- ০১৭৪০৯৪৩০৮২ (সম্পাদক ও প্রকাশক)
মোবাইল নাম্বার- ০১৭১৬৪৩৯৬২৫ (বার্তা সম্পাদক )
© All rights reserved © 2023 shaistaganj