মতিউর রহমান মুন্না, মৌলভীবাজার থেকে ফিরে॥ নিখোঁজের ১৯ দিন পর হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার সীমান্তবর্তী মৌলভী বাজার সদরের গুড়ারাই গ্রামের সফিক মিয়ার বাড়ির একটি পরিত্যক্ত  ঘরে ভিতরে মাটি খুড়ে নীচ থেকে গতকাল শুক্রবার দুপুরে  মশিউর রহমান মিছলু মিয়া (৪০) নামে এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে মৌলভীবাজার পুলিশ। এ ঘটনায় মৃতের স্ত্রীসহ ৪ জনকে আটক করা হয়েছে। চাঞ্চল্যকর ঘটনার খবর পেয়ে এলাকার শত শত মানুষ জড়ো হয়ে দায়ীদের ফাসিঁ দাবী করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানাযায়, গত ১৫ ডিসেম্বর বিকেলে মৌলভীবাজার জেলার খলিলপুর ইউনিয়নের গুড়ারাই গ্রামের বাসিন্দা ও বর্তমান মৌলভীবাজার শহরের কাজিঁরগাঁও এলাকার মৃত আতাউর রহমান ঠাকুর মিয়ার ছেলে দু’ সন্তানের জনক মশিউর রহমান মিছলু মিয়া একই ইউনিয়নের কেশবচর গ্রামস্থ শশুর বাড়ি থেকে মামাতো ভাই গুড়ারাই গ্রামে সফিক মিয়ার সাথে বের হয়ে আর বাড়ি ফিরেনি। দু’ দিন পর গত ১৭ ডিসেম্বর নিহতের স্ত্রী মায়ারুন বেগম মিছলু মিয়ার বাড়িতে তার নিখোজের খবর জানায়। খবর পেয়ে মৃতের ভাই সুফি মিয়া বাদী হয়ে মৌলভীবাজার সদর থানায় সাধারণ ডায়েরী করেন। এর প্রেক্ষিতে পুলিশ ঘটনার তদন্তে গিয়ে মৃতের স্ত্রীকে থানায় ডেকে আনেন। এ সময় পুলিশের জিঞ্জাসাবাদ কালে সন্দেহের সৃষ্টি হলে নিহতের স্ত্রী মায়ারুন বেগম, ভাই ফয়েজ মিয়াকে আটক করে পুলিশ। এক পর্যায়ে মোবাইল ফোন ট্রাকিং করে মৃতের ব্যবহৃত ফোন লামুয়া গ্রামের ছমিরুন নেছা নামের মহিলার কাছ থেকে উদ্ধার করে এবং তাকে আটক করে পুলিশ। ধৃত ছমিরুন পুলিশকে জানায় সে ওই মোবাইলটি পাশের গুড়ারাই গ্রামের নিহতের মামাতো ভাই সফিক মিয়ার কাছ থেকে পেয়েছে। উক্ত তথ্য এবং কললিষ্টের সুত্রধরে পুলিশ গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নিজ বাড়ি থেকে সফিক মিয়াকে আটক করে থানায় নিয়ে যায় এবং তার দেয়া স্বীকারোক্তি মতে পুলিশ গতকাল শুক্রবার সকালে সফিকের বাড়ির একটি পরিত্যক্ত লাকড়ীর ঘরের ভিতর থেকে ডোম দিয়ে প্রায় ১ ঘন্টা মাটি খুঁড়ে প্রায় ৫ফুট গভীর থেকে মিছলু মিয়ার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাশ উদ্ধারের পর পর গ্রামের ও আশপাশ এলাকার শত শত মানুষ খুনিদের ফাসিঁর দাবী করে বিক্ষোভ মিছিল করেছে। নিহতের ভাই সুফি মিয়া বলেন, আমার ভাইকে কিভাবে হত্যা করা হয়েছে জানিনা। তাদের প্রকৃত ঘটনার রহস্য উদঘাটনসহ দায়ীদের দৃষ্টান্ত মুলক শাস্তি দাবী করেন। মৌলভীবাজার সদর মডেল থানার অফিসার ইনর্চাজ আব্দুস ছালেক জানান, নিহত মশিউর রহমান মিছলূ ১৪ ডিসেম্বর থেকে শশুরবাড়ি থেকে নিখোজের ৩ দিন পর অর্থাৎ ১৭ ডিসেম্বর থানায় িিজডি করেন। এর প্রেক্ষিতে তদন্তের এক পর্যায়ে মোবাইল ফোন ট্রাকিং এবং কললিষ্টের সুত্রধরে ইতিপুর্বে নিহতের স্ত্রী, শ্যালক ও ছমিরুনকে গ্রেফতার করা হয়।

বৃহস্পতিবার রাতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে নিজ বাড়ি থেকে সফিক মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। এ সময় সফিক মিয়া পুলিশের কাছে ঘটনার স্বীকারোক্তি মূলক জবান বন্দি দেয়। তার স্বীকারোক্তি মতে শুক্রবার গভীর রাত ৩টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থল এসে মিছলু মিয়ার লাশ ঘরের ভিতরে মাটি নীচে পুতে রাখার বিষয়টি নিশ্চিত হয়। এবং সকাল ১১ টার দিকে মাটির নীচ থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এক প্রশ্নের জবাবে ওসি আব্দুস ছালেক বলেন, চাঞ্চল্যকর এই হত্যাকান্ডটি পারিবারিক ও সম্পত্তি নিয়ে বিরোধের জের ধরে সংঘটিত হতে পারে বলেও প্রাথমিক ভাবে ধারনা করা হচ্ছে।
এলাকাবাসী এই নির্মম হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে এসে তাদের ফাসিঁ দাবী করেন। এক পর্যায়ে ক্ষোদ্ধ গ্রামবাসী ঘাতকদের ফাসিঁর দাবী করে বাড়ির পাশের রাস্তায় বিক্ষোভ মিছিল করেন।