আনোয়ার হোসেন মিঠু,নবীগঞ্জ থেকে : হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ পৌর এলাকার পুর্ব তিমিরপুর গ্রামে মঙ্গলবার (১১ মে ) সন্ধ্যায় ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধু আঁখি আক্তার (১৯)কে তার স্বামী ও স্বামীর বাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য নির্যাতন করে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার অভিযোগ উঠেছে।
অভিযোগ করেছেন নিহত আঁখির পরিবার। পুলিশ হাসপাতাল থেকে মৃতের ছুরতহাল শেষে থানায় নিয়ে গেছে।
আঁখির মরদেহ বুধবার (১২ মে) হবিগঞ্জ মর্গে ময়না তদন্তের জন্য প্রেরণ করা হবে বলে জানাগেছে।
এদিকে নিহতের স্বামী বিজয় মিয়াকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে নবীগঞ্জ থানা পুলিশ। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি চলছে বলে জানাগেছে।
সুত্রে জানাযায়, নবীগঞ্জ পৌর এলাকার পুর্ব তিমিরপুর গ্রামের ফজল মিয়ার ছেলে বিজয় মিয়া (২৪) ভালবেসে এক বছর আগে বিয়ে করে একই গ্রামের ছায়েদ মিয়ার মেয়ে আঁখি বেগম(১৯)কে।
প্রেম করে বিয়ে করায় এবং মেয়ে পরিবারকে ছোট জাত আখ্যা দিয়ে ছেলের পরিবার প্রথমে তাদের বাড়িতে জায়গা দেয়নি। কিছু দিন পর ছেলেকে তার স্ত্রীকে থাকার জন্য বাড়ির পাশে আলাদা ঘর নির্মাণ করে দেন বিজয় মিয়ার পিতা ফজল মিয়া। কিন্তু বিয়ের কিছু দিন যেতে না যেতেই যৌতুকের জন্য আঁখি বেগমকে মারপিট করে তার স্বামী, শশুড় ও শাশুড়ি। খবর পেয়ে মেয়ের বাবা একাধিকবার তাদের বাড়িতে মেয়েকে দেখতে যেতে চাইলে স্বামীর পরিবার সেই সুযোগ দেয়নি। তবে প্রায় সময়ই স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হতো।
গতকাল মঙ্গলবার ইফতারের ১০ মিনিট আগে স্বামী বিজয় মিয়া তার শশুড় ছায়েদ মিয়ার মোবাইল নম্বারে ফোন করে বুধবার সকালে তাদের বাড়িতে যেতে বলে এবং তার মেয়ে আঁখির বিচার করে মেয়ে সাথে নিয়ে যেতেও বলে বিজয়। এর কিছুক্ষন পরই মেয়ের বাবা খবর পান তার মেয়েকে নিয়ে তার স্বামী ও শশুড় বাড়ির লোকজন হাসপাতালে নিয়ে গেছেন। তিনি হাসপাতাল আসলে মেয়ের মৃত দেহ হাসপাতালের মেঝেতে পড়ে থাকতে দেখেন।
খবর পেয়ে নবীগঞ্জ থানার সেকেন্ড অফিসার এস.আই সমিরন দাশ একদল পুলিশ নিয়ে হাসপাতালে যান। সেখানে মৃতের ছুরতহাল তৈরী শেষে লাশ থানায় নিয়ে আসেন। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, মৃতের শরীরে কোন আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়নি। তবে ময়না তদন্ত রির্পোট প্রাপ্তি সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে বলে জানান এস.আই সমিরন দাশ। তার গলায় ফাঁশের দাগ রয়েছে।
নিহতের স্বামী বিজয় মিয়া জানান, তারা স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিকালের দিকে ঝগড়া হয়। সন্ধ্যার দিকে ঘরের তীরের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় আঁখিকে দেখতে পেয়ে তাকে নামিয়ে হাসপাতাল নিয়ে আসেন। তবে কি কারনে ঝগড়া হয়েছে স্বামী তা স্পষ্ট করে বলতে পারেনি। এদিকে নিহত মেয়ের বাবা ছায়েদ মিয়া আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগ এনে থানায় মামলা প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানাগেছে। এছাড়া বিয়ের ১ বছরের মধ্যে দুটি গর্ভ নষ্ট করার অভিযোগ করেন আঁখির বাবা। বর্তমানেও আঁখি ৪ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বলে জানান তিনি।