হবিগঞ্জ প্রতিনিধি : হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের যুবকের প্রতারণা শিকার হয়েছেন বগুড়ার এক গৃহবধূ। ওই যুবকের প্ররোচনায় স্বামীকে তালাক দিয়ে তাকে বিয়েও করে। কিন্তু এখন তাকে বাড়িতে আশ্রয় দিচ্ছে না ওই যুবক। নিরুপায় হয়ে ওই গৃহবধূ বানিয়াচং থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন।

বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলার বাশহাটা গ্রামের সাহেব আলীর মেয়ে শাহনাজ আক্তার। ২০০৮ সালে তার বিয়ে হয়েছিল নেত্রকোনার মদন উপজেলার জাওলা গ্রামের আলিম উদ্দিনের ছেলে এরশাদ মিয়ার সঙ্গে। তাদের পরিবারে জন্ম নেয় এক ছেলেসন্তান। ভাগ্যের অন্বেষণে তারা গাজীপুরে এসে বসবাস করে এবং তার স্বামী চাকরি নেয় একটি গার্মেন্টসে। স্বামী এরশাদ মিয়া যে গার্মেন্টসে চাকরি করতেন, সেখানে কাজ করত হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলার বড়ইউড়ি ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের সামছু মিয়া তালুকদারের ছেলে আসাদুর রহমান তালুকদার। কাজের সুবাধে দুজনের মধ্যে বন্ধুত্ব হয়।

এ সুবাধে আসাদুর রহমান তালুকদার মাঝে মাঝে এরশাদ মিয়ার বাসায়ও যাওয়া-আসা করত। তখন পরিচয় হয় এরশাদের স্ত্রী শাহনাজ আক্তারের সঙ্গে।

একপর্যায়ে আসাদ শাহনাজকে বিভিন্নভাবে প্রলোভন দেয় এরশাদ মিয়াকে তালাক দিয়ে তাকে বিয়ে করার জন্য। শাহনাজও তাতে সায় দিয়ে স্বামী এরশাদকে তালাক দেয়। পরে তাকে নিয়ে আসাদ কোর্ট ম্যারেজ করবে বলে কোর্টে যায়।

কিন্তু আইনজীবীর চেম্বারে শাহনাজকে বসিয়ে রেখে পালিয়ে গিয়ে মোবাইল বন্ধ করে দেয় আসাদ। পরে যোগাযোগ হলে গত ২১ জুন নোয়াগাঁও গ্রামে শাহনাজ আক্তার চলে আসলে আসাদ ও তার বাবা সামছু মিয়া, মা শিরিয়া বেগম এবং মামা মহিব উল্লাহ এক মাওলানাকে এনে তাদের বিয়ে পড়িয়ে দেন।

এক সপ্তাহ ঘর-সংসার করার পর আসাদ শাহনাজকে ঢাকায় নিয়ে একটি বাসা ভাড়া নিতে বলে। পরে সে এসে সেখানে গার্মেন্টসে চাকরি নেবে। কিন্তু শাহনাজ ঢাকায় গেলে সে তার সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়।

পরে বৃহস্পতিবার শাহনাজ আবারও নোয়াগাঁও গ্রামে আসলে আসাদ তাকে তাড়িয় দেয়।

এ ব্যাপারে গ্রামের লোকজনের কাছে গিয়ে কোনো প্রতিকার না পেয়ে শাহনাজ চলে যায় বানিয়াচং থানায়। শুক্রবার বানিয়াচং থানায় আসাদুর রহমান এবং তার বাবা-মা ও মামার নামে অভিযোগ দায়ের করে।

শাহনাজ আক্তার জানান, থানা থেকে বিষয়টি দেখার জন্য আসাদুর রহমানের চাচা সাবেক ইউপি সদস্য আরজু মিয়াকে দায়িত্ব দেন। কিন্তু আরজু মিয়া তাকে কোনো সমাধান না দিয়ে শনিবার আবার যোগাযোগ করতে বলেছেন।

বানিয়াচং থানার ওসি মোজাম্মেলক হক অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বিষয়টি স্থানীয়ভাবে সমাধানের জন্য সাবেক ইউপি সদস্য আরজু মিয়াকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।

সাবেক মেম্বার আরজু মিয়া জানান, পুলিশ আমাকে বলেছে বিষয়টি দেখার জন্য। কিন্তু আমার ভাতিজা ঢাকায় থাকে। তার কোনো খোঁজখবর পাই না। তাকে না পেয়ে আমি কীভাবে সমাধান করব। এছাড়াও সে এখন আমার পরিবার থেকে আলাদা থাকে।

(সূত্র : যুগান্তর)